মুম্বাই শহর। ১৯৮০ সাল ।
প্রথম দেখেছিলাম
কোলাবার মাছের বাজার,
সত্যিই দেখার মতো একটা মাছ-বাজার
ভারী সুন্দর তার রঙ-ঢঙ
রাঢ়-বাঙলার
কাঁচা দোতলা বাড়ীর মতো উঁচু,
ধর্মশালার হলঘরের মতো বিশাল,
শক্তপোক্ত ফ্রেমে আঁটা
ঢেউ খেলানো টিনের চারচালা ছাদ,
বাজারের নির্মান কৌশলে
কারখানার আদল
বাংলাদেশি শৈলীর অনুকরণ ।
দুপাশে লম্বালম্বি দুটো লোহার গেট
ঝলমলে আলো,
পায়ের তলার মেঝে
ঝাঁ চকচকে
দেয়ালের ধারে ধারে চারিপাশে
একগলা উঁচু
মোজাইক করা ধাপি
সেখানে নানান ধরনের মাছ
পমফ্রেট, হালুয়া, পালা, ভাঙ্গড়া সাজানো
বড় বড় বঁটির পাটে বসা
মেছুনীর দল
পুরুষেরা সমুদ্রে মাছ ধরে
বৌ-রা বিক্রি করে
লাখ লাখ টাকার মালিক
কিন্তু মেছুনির কাজ ছাড়েনি ।
সুন্দর সাজ-গোজ, পরিপাটি
দামী দামী শাড়ী
শরীর ভরা সোনার গয়না,
অন্ততঃ বিশ ভরির কম নয়
দেখে মনে হয়
মন্ডপ থেকে তুলে আনা
এক একটা বিয়ের কনে ।
বাংলার হত দরিদ্র মেছুনী দেখা চোখ
হতভম্ব হয়েছিলাম ।
মাছ কিনতে গিয়ে
মাছের কথাই মনে ছিল না
অনেক ক্ষণ
বড় বড় চোখে
শুধু মেছুনী দেখেছিলাম ।


হে ঈশ্বর,
বাঙলার শহরে অমন মাছ-বাজার
আর মেছুনি
কবে দেখতে পাব ?