এই উন্মাদের নৃত্যস্থল আমার জন্মভূমি না
প্রশান্ত কুমার ঘোষ


যে সন্তান পিতাকে দুমুঠো অন্ন দেয়না
আমি তার কদর্য করি-
যে নাগরিক সম্পত্তির লোভে নিজের ভাইয়ের রক্তে স্নাত হয়
আমি তার কদর্য করি-
যে সভ্য নাগরিক সমাজ সন্তানসম সভ্যতার সুরক্ষায় মুখ ফিরিয়ে থাকে
আমি তার কদর্য করি-
যে বন্ধু সম্পর্কের গনগনে আঁচে স্বার্থ সেঁকে নেই
আমি তার কদর্য করি-
যে স্বামী বা স্ত্রী রিপুর ঢেউয়ে স্নাত হয়ে স্ত্রী বা স্বামীকে খুন করে
আমি তার কদর্য করি।


পেপারের ক্যানভাসে রক্তের স্রোত
অক্ষরে অক্ষরে পচা লাশের ভিড়
ভাঁজে ভাঁজে বলাত্কারের উগ্র আর্তনাদ,
নিউজ চ্যানেলের শিরোনামে কলির অকাল পতনের প্রতিচ্ছবি
জীবনের সিরিয়ালে কঙ্কালের প্রেক্ষাগৃহ
এ গ্রহের শিরা উপশিরায় মৃত্যুর চোরাস্রোত,
আজ সর্বত্র হিংসার হাড় কাঁপুনি শৈত্য
প্রতিহিংসার বরফে জমজমাট বাড়ি উঠান
এ বিশ্ব সন্ত্রাসের রঙ্গমঞ্চ;
মোহন্ধের লেলিহান শিখায় কসাইখানার তাণ্ডব।


এই কসাইখানা আমার জন্মভূমি না
এই উন্মাদের নৃত্যস্থল আমার জন্মভূমি না
এই স্বার্থের রাজপ্রাসাদ আমার জন্মভূমি না ,
এই ঝোড় জঙ্গলের লাশ পুঁতে রাখার স্থান আমার জন্মভূমি না
ধর্মের অসহনশীলতা আমার জন্মভূমি না।


সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার
মানি না
অশিষ্ট পোস্টের জন্য ভাঙচুর আগুন খুন
মানি না
রিপুর হ্যাজাক আলোর ঝর্ণধারায় চুমু
মানি না।


আমি নেতাজীর স্রোতে গা ভাসিয়ে আরও একবার আন্দোলন করবো
বিপ্লব করবো
ছিনিয়ে নেব আমার সোনার বিশ্বকে,
নিজের রক্তের গামে ছিন্নভিন্ন মায়ের দেহকে জুড়ে দেব
দেশে এনে দেব এক ঊষা
এক ফোঁটা শিশির বিন্দুর স্বচ্ছ আয়নায় দেখবো বিশ্বের শুচি অবয়ব ,
আমি থাকব তোমাদের অন্তরে
অস্থি মজ্জায়
রক্তের প্রবাহে
কালো-আলো সর্বক্ষণে
আকাশের মত বুক চিতিয়ে থাকব
উচ্ছলিত বাতাসের গতিতে
নিম্নচাপের আবেশে
বন্যা প্লাবনে
আমি থাকব
পেতে দেব সূর্যের মত কমলা আলোর বিছানা  
ছড়িয়ে দেব আঁধার জমিনে রূপালী জোছনা
থেকে যাব সকালের শিশির বিন্দুর মত হৃদয়ের মজ্জায়
হৃদয় যতদিন থাকবে ততদিন
প্রাণ যতদিন থাকবে ততদিন
মানুষ যতদিন থাকবে ততদিন
দেশ যতদিন থাকবে ততদিন
বিশ্ব যতদিন থাকবে ততদিন।