হে মানব তুমি কি জানো,
দুঃখের মাতৃভাষা কী ?
ভালোবাসার মাতৃভাষা কী ?
বেদনার মাতৃভাষা কী ?
নির্মম যুদ্ধের মাতৃভাষা কী ?
ওই যে দূরে মাঠের পরে বয়ে চলা,
দিগন্ত ছোঁয়া নদী, তার কী মাতৃভাষা ?
সমাজের বুকে যে তামাম অত্মস্যাৎ ঘটে চলছে,
সেই রূঢ় নগ্নতার মাতৃভাষা কী ?
তুমি কি জানো একটা নিবিড় বৃক্ষ,
যখন আর একটা বৃক্ষের সাথে কথা বলে,
তখন সে কোন ভাষায় কথা বলে ?
হয়তো জানি তোমাদের কাছে আমার এই,
অবান্তর প্রশ্নগুলোর কোনো মূল্য নেই!
কিন্তু বিশ্বাস করো,
আজও আমি ঘরের কোনো দরোজায় দাঁড়ালেই,
সভ্যতার শেষ মানুষের পদশব্দ শুনি!
আর কোথাও করুণ চোখের জল,
গাল বেয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ে।
আর সেই পতনের শব্দে সিক্ত হতে থাকে,
শরীরের সর্বাঙ্গে সবুজ আর সবুজ !
আজও আমি ঘরের দোরে দাঁড়ালেই,
পোষা পাখিদের কিচিরমিচির শুনতে পাই,
বেশকিছু শিশুদের কলরব ভেসে আসে,
সুবর্ণ কঙ্কন পরা কামনার হাস্যধ্বনি,
আজও আমার কানে কানে বর্তায় !
ওই যে দূরে নষ্ট গলির আঁধারে,
নিশ্চুপ দরোজায় ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে,
" ওরা " ! মধ্যরাতে উলঙ্গ শয্যায়,
ওরা কোন ভাষায় কথা বলে ?
ওই যে কমলা রং কিশোরীরা যাচ্ছে ইস্কুলে,
আজও ঐ কিশোরীর প্রথম কম্পনে দুটি হাত রাখলে,
রক্তে স্রোত গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ে,
শব্দ হয়, শুনতে পায় !
কিন্তু জানো কি ওই রক্তের মাতৃভাষা কী ?
বুঝতে চেষ্টা করেছো কি ওই বেদনার মাতৃভাষা কী ?
এই নর-কঙ্কাল সমাজে থেকে,
আমিও যে হারিয়ে ফেলেছি নিজের সত্তা !
তাই আজ শুধু আমিও জানি,
এই সমাজে আমিও একটি মানুষ রূপি অমানুষ!
আর আমার মাতৃভাষা, যৌবনের ক্ষুধা !