শনিবার এলেই ঘুম হয় হারাম
রোববার কিস্তি,
সমিতি-দোকানে বহু দেনা বাকি
লম্বা ফিরিস্তি।


কোন্টি পামু এতো টেকা হামি,
পকেট এখন ফাঁকা!
সোমবারে আছে ওয়াল্ড ভিশনে
কিস্তি তেরশ টেকা।


প্রথম যে'বার কিস্তি তুইলা
কিনিছিনু দুধের গরু,
রাত্রি গভীরে চুরি গেলো তা'
পতনের হলো শুরু।
একটা কিস্তি শোধ দিতে গিয়া
আরেক কিস্তি তোলা,
দেনার অতলে ডুবে গেছি হায়
এখন হামি দিগ্-ভোলা।


ঠেঙ্গামারার ম্যানেজার আইসা
শাসিয়েছে গতকাল_
আগামী হপ্তায় যদি বাকি থাকে
তুলে নিবি পিঠের ছাল।
আশা সমিতি_ নিয়ে গেছে আগেই
খাটের পাসি'টা খুলে,
মাটির দেয়ালে মশারি এখন
রশিতে হাওয়ায় দোলে।


আহা কি ব্যথা সর্বনাশা
কারেন্ট লোনের ফাঁদ!
প্রভাবশালী হারুন চাচা'রা
খুলে নিছে টিনের ছাদ।
হাজার দশেক টাকা দিয়ে চাচা
নিছিলো জমির দলিল,
সাক্ষী ছিল প্রতাপপুরের
বদমায়েশ ঐ খলিল।
স্ট্যাম্পে লেখা_ 'প্রতি মাস শেষে
দিতে হবে হাজার করে'
না যদি পারি' যোগ হবে তা-ও
আসলের সাথে ও-রে।
বছর তিনেকে সেই টাকা নাকি
হয়ে গেছে লাখ পার!
লোনের জালে জীবন হামার
হয়ে গেছে অঙ্গার।


হাঁড়ি-পাতিল আর বাসনকোসন
যা ছিল ঘরের কোণে,
নিয়ে গেছে সব পাড়ার সমিতি
একে একে সব গুনে।


বাড়িটা এখন নিজের তো নয়
যেনো তা পাওনাদারের,
পালিয়ে বেড়াই যদি ধরা খাই
করে দিছে মামলা দায়ের।


বউটা হামার পোলাপানসহ
গেছে চলে বাপের বাড়ি,
তার কি'বা দোষ_ ভাঙা সংসারে
নাই কিছু দরকারী।
মান্ষের বাড়িতে কামলা খাইটা
যা দু'টো পয়সা জোটে,
পুঁজিবাদীদের পাওনা শেষে
কারো মুখে হাসি না ফোটে।


ভাবতেছি বসে দিমুনা কিস্তি
যা থাক্ কপালে লেখা
লোনের জীবন_ সুখের তো নয়
হয়ে গেছে ঠেকে শেখা__


খুঁজতেছি গারাক্ বেচমু ভিটা
যামু শহরে চলে,
দিনে ঘুরামু ভ্যানের চাকা
ঘুমামু রাত্রি হলে।