পলাশ বাবু হাটে গেল এবার
কিনবে নাকি সুদর্শন এক মোটা তাঁজা খাসি
বায়না যখন ধরল বাপের কাছে
টাকা পেল মোটের উপর তিনশো এবং আশি।
এই টাকাতেই কিনবে নাকি সুদর্শন এক খাঁসি।
পলাশ গেল হাটে
বুকের উপর বেঁধে রেখে অনেকখানি আশা
যেমন করেই কিনতে হবে একটি যুবক খাঁসি
খাঁসির জন্য বুকে যে তার অনেক ভালবাসা।
পলাশবাবু সকাল সকাল গঞ্জে গেল ভাই
কিনবে খাঁসি দরাদরি করছে ভিষণ তাই।
কেউ বলছে এই টাকাতে খাঁসি নিতে চাও?
তার চে বরং  এই খাঁসিটার লেজটি নিয়ে যাও।
কেউ বলছে এই টাকাতে খাঁসি কি আর পাও?
বরং তুমি কয়েক দিনের ভাড়ায় নিয়ে যাও।
কেউ বলছে মিঞা বাবু, মাত্র তিনশো আশি?
এই টাকাতে কিনবে যুবক খাঁসি?
এতো হলো আমার খাঁসির একটি পায়ের দাম
তুমি বরং খাঁসির পায়ে দিয়ে যাও সেলাম।
কেউবা বলে খোকাবাবু হাস, মুরগি কেনো
ওটাই তোমার সাধের খাঁসি মনে মনে জেনো।
পলাশবাবু দুঃখ পেলো মনে
তবে কি তার মিটবে না সাধ ভাবছে ক্ষণে ক্ষণে।
কোথায় যাবে কেমনে পাবে অল্প দামের খাঁসি
ঘুরছে মাথা, পুড়ছে যে মন স্বপ্ন বুকে আসি।
ব্যথায় ভরা বুকটা নিয়ে ফিরবে এখন বাড়ি
এমন সময় মুরুব্বি এক আসল যে তার পাশে
বলল বাছা দুঃখ কেনো মনে
অল্প টাকার খাসিই আমার আছে।
চাইলে তুমি দেখতে পারো, মিথ্যে কথা নয়
পলাশ মিয়ার স্বপ্ন বুঝি সত্যি এবার হয়।
খাঁসিতো নয় দেখতে যেন খরগোশেরই ছানা
ছানার আবার একটা যে চোখ কানা।
খাঁসির ছানা তাহার দিকে চেয়ে মুচকি হাসে
তাই না দেখে পলাশ মিয়ার ভিষণ মায়া আসে।
সন্ধ্যে বেলার অন্ধকারে কিনলো খাঁসির ছানা
পলাশ মিয়ার আনন্দে আর কে করবে মানা?
রোগাসোকা খাঁসির ছানা আনলো যখন বাড়ি
মায়ে যে তার খাঁসি দেখে মুখ করলো হাড়ি।
ভাই বোনেরা খাঁসি দেখে হাসছে ভিষণ খালি
দু'এক জনে ভেংচি কেটে দিচ্ছে হাতের তালি।
কেউবা আবার আশে পাশে করছে কানাকানি
আসল কথা কিছুক্ষণেই হইল জানা জানি।
খাঁসির ছানা কোলে নিল পলাশ মিয়ার ভাই
দেখলো চেয়ে খাঁসির ছানার একটি যে পাও নাই।
তাই না দেখে বাড়ির মধ্যে পড়লো হাসীর রোল
পলাশ মিয়া লজ্বা পেলো চোখে এলো জল।
বলল, আমার দোষ কি বলো, খাঁসি অল্প টাকার
এ ছাড়া আর কি আর পাবার, ওটাই স্বপ্ন আমার।
ওকেই আমি কোলে পিঠে করবো মানুষ শোন
তোমরা যতই ভেংচি কাটো লাভ হবে না কোনো"।
তখন থেকেই নাই কমতি পিচ্চি খাঁসির সেবার
পলাশ মিয়ার সেই খাঁসিটা মানুষ হবে এবার।


  ছ। ১/ ১৩      
                        কিশোরীগঞ্জ।



ছ।১/১৭