মা যখন মৃত্যু শয্যায়
আমি শিয়রে বসে ,
জড়িয়ে ধরে সে বলল আমায়
চোখের জলে ভেসে ।
ছাব্বিশে মার্চ কালো রাত্রে
তোর দাদিকে কবর দিয়ে ,
দাদা হারালো একাত্তুরের
মুক্তি যুদ্ধে গিয়ে ।
চাচা তোর ছিলনা কোন
ফুপু ছিল তিন ,
জন্মের পর তাদের কে তুই
দেখিসনি কোন  দিন ।
তোর নানির মৃত্যু হল
আমার বিয়ের আগে,
তোর নানার মুখের ছবি
আমার স্মৃতিতে ও না জাগে ।
দুটি মাত্র মামা তোর
বড়টা পাগলাগারে
ছোট মামা ঢাকায় গিয়ে
আসল না আর ফিরে ।
একটি মাত্র খালা ছিল
সেও অষ্টআশির বানে ,
কোথায় যে হারিয়ে গেছে
কেউ না তাহা জানে ।
ঝর ঝঞ্জার মাঝে তোকে
রেখে আচল তলে ,
সব হারানোর বদনাগুলো
দিতাম আমি  ভুলে ।
আজকে আমার মা হারাবি
বাবাকে দেখিস নাই ,
সারা জীবন চোখের জলে
ভাসবি এখন তাই ।
ধরণীতে আপন বলে আর
রইবে না কেউ তোর,
শত দু:খেও কেউ না এসে
করবে না তোরে আদর ।

অবাক হয়ে শুনছি আমি
মায়ের কথাগুলো ,
শুনতে শুনতে চেয়ে দেখি
সেও চলে গেল ।
সর্বহারা হলাম আমি
এই ধরণীর মাঝে ।
মায়ের মুখের শেষ কথাটা
আজো কানে ঝনঝনিয়ে বাঁজে ।