নিচে ক্যাথেটার করানো
নাকে খাবার নল
তাকিয়ে ছিলো বাবা মোর পানে
মুখে ছিলো না বল।


চক্ষু কোঠরে অক্ষিগোলক
করছিলো ছল ছল
চোখা-চোখিতে দু’জনারি
বিসর্জিত হলো জল।


পায়ের কাছে বসে, রাখি হাতে হাত
মুখেতে নাই বুলি
কোমর পর্যন্ত তার নিথর হলো,
শ্বাস চলে কেবলি।


মাথার কাছে কাঁদছে ছোট
মাটিতে বসা মোর মায়
এদিক ওদিক তাকিয়ে বাবা
কি জানি বলিতে চায়?


হঠাৎ করে ঝেঁকে উঠে বাবা
কলিজা ছিঁড়ে যায়
তাকাও বাবা মোর পানে
হয়ে গেলাম অসহায়।


মাটিতে কাঁদে মোর জননী
ছোট ভাই একপাশে
কর্নিয়া ভেদে পড়ছিলো জল
আমি বাবার বুকের মাঝে।


লাইনের কাছে কুল বৃক্ষ তলে
গোসল হলো সারা
প্রখর রৌদ্রে গলে যাবে লাশ
তাই জানাজার তাড়া।


মাথার কাছে আগর বাতি
সবার চোখে জল
বাড়ির মেয়েরা হাউ মাউ করে,
সান্ত্বনা কি দেই বল?


আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশী বলে
বড় ভাল ছিল মোর বাবা
এক ডাকে সবার পাশে দাঁড়াতো
ছিলো বাঘের মতো থাবা।


খবর পেয়ে হন্তদন্ত হয়ে সবাই
ছুটে আসে জানাজায়
কবরে শুয়াইয়ে দোয়া করি সবে
জান্নাতুল ফেরদাউস যেন সে পায়।


দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছি আমি
কেমন থমথমে ভাব
আর্তচিৎকার গ্রাস করছে আমায়
বেদনা বিধুর রাত।


ভাবি আকাশপানে চেয়ে  
অসংখ্য নক্ষত্রপুঞ্জের দিকে তাকিয়ে
তুমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা
তোমার ঋণ শোধিবো কি দিয়ে?


তিনি হয়তো কোন বীরত্বের কাজ করেননি
করেননি বিরাট কিছু জয়
তবু, অকুতোভয়, সহজ সরল
এমন মানুষ কি হয় ?


আমি ব্যর্থ, হয়তো পূর্ণ করতে পারিনি
সন্তানের দায়িত্ব  
তুমি আমার ট্র্যাজিক নায়ক
আমি আদর্শ সন্তান হবো দিয়ে সর্বস্ব।