কিশোর কন্ঠে চিঠি পাঠাতে,
এসেছিলুম গায়ের ডাক ঘরে ।
ডাক ঘরের দরজে লোহার তালা,
বারান্দায় কত আবর্জনা ।
মনে ভাবলুম এইখানে মানুষ থাকেনা ।
ডাকের পাসে চায়ের দোকান
বসিয়া ক এক জন ।
আমি ক এক পা এগিয়ে বল্লাম,
ডাক খুলবে কি না ?
উত্তরে এক ব্যাকা ,
খুলিবে ভায়, খুলিবে আজ এটা ।
আমি বল্লাম কখন খুলিবে?
এখনতো পনে নয়টা!
সে বলিল এখনি খুলিব
ধরো মোত পেচটা ।
দোকানে বসে যারা,
হাসিতে হাসিতে দিশেহারা ।
তিনি যে ডাকের কর্মকর্তা
আমার ছিল অজানা ।
তার পেচটা ধরে এগিয়ে এলুম,
এলুম এক গেটে ।
গেটের উপার সুন্দার ফুল,
বৃষ্টিতে সব ভিজে ।
তাহার অগোচরে,
এক গোচ্ছ সুন্দার ফুল
রাখলাম আমার হাতে ।
কে যেন ভিতর থেকে উঠল ডেকে
আমি মরি ভয়ে
কি জানি কি বলবে সে যে,
ফুল ছেড়ারি দায়ে ।
গেট পেরিয়ে ঢুকতে যেয়ে,
দেখলুম একটা যুবতি মেয়ে,
ঝাটা হাতে দিচ্ছে ঝাড়ু
নোংড়া উঠান জুড়ে ।
ডাকের সব যন্ত্রপাতি
বয়ে আনে এক বৃদ্ধা বেটি ।
আমি বল্লাম চুপি চুপি
পরের ঘর পরের বাড়ি,
অফিস খুল্লে  কিসের ক্ষতি ?
উত্তরে বলিছে ব্যাকা ,
সারা দিনে একটা চিঠি তাও জোটে না ।
খামো খা অফিস খোলা ।
আমি বল্লুম এখানে থাকেন ক ঘন্টা ?
সে বল্ল দশটা বাজলেই দিই হাটা ।
আমিঃ আসেন তো প্রায় নয়টা,
দশটা বাজলেই দিবেন হাটা !
এ আবার কেমন কথা ?
সেঃ আরে বেটা বেতন কত জান সেটা ?
জানলে পরে তোমার মুখে
আসতোনা আর এমন কথা ।
বেতন মাত্র নয়শত নব্বই টাকা ।
কাম করমু আর কতটা ?
আমিঃ কাম করেন কি একা ?
সেঃ পৌষ্ট মাষ্টার ঐ বৃদ্ধা ,
করছে যিনি রান্না ।
বৃদ্ধা আবার দেয় শিক্ষিয়ে,
ওমন করে না এমন করে ।
চিঠির ওজন বেশি হলে,
টাকার অংক যাবে বেড়ে ।
এবার দেখি বেকা,
লিখতে আমার নাম ঠিকানা
করছে কত তাড়া হোড়া ।
আমি বল্লুম করছেন কি ?
সে বল্ল ঘোড়ার ঘাস কাটি,
দেখতে পাওনা তুমি ?
আমি বল্লুম, আমিও তাই ভাবতেছি ।
সেঃ কি, আমরা ঘোড়ার ঘাস কাটি ?
ও মাসি! মাসি ! আমরা নাকি দিই ফাঁকি ।
বৃদ্ধা বল্ল ঐ বেটা কথা একটু কম বাতলা ।
পৌষ্ঠ অফিসে কত কাম তোমরা জানোনা ।
আমি বল্লাম ও মাসি মা !
করছে কত তাড়া হোড়া ।
চুপি চুপি বলছে কথা ।
কাজের সময় করে রান্না,
একা একা এতো কাম সামলানো যায় না ।
বৃদ্ধা তখন রেগেমেগে বল্ল,
ঐ ব্যাকা, কোথায় পেলি কাম ?
নাম ঠিকানা লিখা হলে লইবি চিঠি দাম,
এটাই তো তোর কাম ।
আমি হলাম পৌষ্ট মাষ্টার,
আমার সাথে পাল্লা দিলে,
ভেঙ্গে খামু ঘাড় ।
ডাক ঘরে ডাকের কাম নায়তো তেমন আর,
বর্তমানে ডাক ঘরে এমনি কারবার ।