আমি চৈত্রের কাছে এক টুকরো মেঘের ছায়া চেয়েছিলাম।
চৈত্র আমায় তাপদাহ দিয়েছিল, জ্বলে পুড়ে ছারখার হবার মতন।
আমি আষাঢ়ের কাছে বলেছিলাম,
আজ মেঘ আর ভাল লাগছেনা,
আমাকে এক টুকরো রৌদ্র দিও।
আষাঢ় আমাকে আরো ঘন কালো মেঘে ঢেকে দিল।
আর বৈশাখের কাছে আমি কিছু চাইবার আগেই
বৈশাখ আমায় সাফ জানিয়ে দিল,
আমার কাজ ঝড়ো হাওয়ায় সব ওলট পালট করে দেয়া।
গুছানো যে আমার কাজ নয়।


এ ভাবেই ছয়টি ঋতুর বারটি মাস চলে যায়।
আমার ক্ষণকালের জীবনের প্রতিটি দিন
আমার কাছে খুব দীর্ঘ মনে হয়!


চৈত্রের তাপদাহ, বৈশাখী ঝড়ো হাওয়া
অথবা আষাঢ়ের ঘন কালো মেঘে ঢাকা জীবনে
আমার আর কিছুই পাওয়া হয়না।


পৌষের হাঁড় কাপানো শীতে হাটু ভেঙ্গে বসে থাকা জীবন আমার!


তবু আমি বেঁচে আছি, এ আর কম কিসে?
তবু আমি কখনো কখনো খেতে পারছি,
ছেঁড়া হোক, তবুও মনুষ্য সমাজে
আমার ইজ্জত ঢাকবার মতন বস্ত্র আছে, এ আর কম কিসে?
শিক্ষা কিংবা চিকিৎসা নাইবা পেলাম,
তবু রাস্তার ধারে ফুটপাথের উপর আমার জন্য
সাড়ে তিন হাত জায়গা আছে শোবার মতন, এ আর কম কিসে?
আর সবার মতন আমারও একটা পৃথিবী আছে,
আমার মাঝে আমার মত একজন মানুষ আছে, এ আর কম কিসে?